শ্রীলঙ্কায় পাশবিক সন্ত্রাসী বোমা হামলার মূল নেপথ্যে ছিলেন মোহাম্মদ হাশিম মোহাম্মদ জাহরান। সেচ্ছাচারী এই কুলাঙ্গার ছাত্র জীবনে শিক্ষকদের কথা অনুসরণ করতো না কখনো।নিজের এলাকায়ও কোনো সামাজিক মূল্য ছিল না শ্রীলংকায় সিরিজবোমা হামলাকারী এই নর পিশাচের। নিজের মতকে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতো। বিয়ে করেছিল নিজের চেয়ে বয়সে অনেক কম এক বালিকাকে। প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার ঘোষণা অনুযায়ী, গত ২১শে এপ্রিল রোববার সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছে জাহরান। এরপর তার সম্পর্কে নানা রকম তথ্য প্রকাশ হতে শুরু করেছে।
জাহরানের ওপর বার্তা সংস্থা রয়টার্স বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়, ১২ বছর বয়সে স্থানীয় জমি’আতুল ফালাহ এরাবিক কলেজে পড়াশোনা শুরু করে জাহরান। শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলে সমুদ্রের পাড়ে একটি ছোট শহরে তাদের বাসা ছিল। বাসায় ছিল ২টি কক্ষ, জাহরান ও তার চার ভাইবোন মিলে অনেক কষ্টেই বসবাস করতো। তাদের পিতা ছিলেন একজন গরিব মানুষ। রাস্তায় প্যাকেটজাত খাদ্য বিক্রি করতেন। এলাকায় তিনি ছোটখাটো চোর বলে পরিচিত ছিলেন।
জমি’আতুল ফালাহ এরাবিক কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল এসএম আলিয়ার সশব্দে হাসতে হাসতে বলেন, জাহরানের পিতা তেমন কিছু করতেন না। তবে মানসিক প্রখরতা দিয়ে সবাইকে বিস্মিত করেছিল জাহরান। তিন বছর পবিত্র কোরআন মুখস্থ করার চেষ্টা করে সে। এরপরেই তার পড়াশোনা ছিল ইসলামিক আইনকানুন নিয়ে। কিন্তু সে যতই শিখতে থাকে ততই যুক্তি দিতে থাকে।
এসএম আলিয়ার বলেন, আমরা যে পদ্ধতিতে শিক্ষা দিচ্ছিলাম সে তার বিরোধিতা করে। সে চাইতো ইসলামভিত্তিক তার উগ্রপন্থাকে প্রাধান্য দিতে। তাই আমরা তাকে বের করে দিয়েছি।
বর্তমানে এই শিক্ষকের বয়স ৭৩ বছর। মুখে লম্বা সাদা দাড়ি। তিনি স্মরণ করতে পারেন জাহরান পড়াশোনা বাদ দিয়ে চলে গিয়েছিল ২০০৫ সালে। তারপর তার পিতা স্কুলে হাজির হয়ে জানতে চান, সে কোথায় যেতে পারে?
এরপর নতুন করে ওই স্কুলে মোহাম্মদ জাহরানকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এখন সারা বিশ্ব তার নাম জানে। ২১শে এপ্রিল কয়েকটি গির্জা ও পাঁচ তারকা হোটেলে সন্ত্রাসী হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এর মূলহোতা সে বলে চিহ্নিত করেছে সরকারি কর্মকর্তারা। ৯ আত্মঘাতী বোমারু ওই হামলায় অংশ নেয়। এতে শিশু, নারী, পুরুষ মিলিয়ে কমপক্ষে ২৫০ মানুষ নিহত হন। হামলাকারীদের বেশির ভাগই সুশিক্ষিত, সম্পদশালী পরিবারের সন্তান। তবে এই বর্ণনা তাদের কথিত নেতা জাহরানের ক্ষেত্রে যায় না। তাদের থেকে ৩০-এর কোটায় বয়সের এই নেতা ছিল ভিন্ন।
প্রাপ্ত বয়সকালের বড় অংশ সে নিজের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করতে ব্যবহার করেছে। এখন ইন্টারনেটের যুগ। তাই নিজের দৃষ্টিভঙ্গি সে স্থানীয় পর্যায়ে রাখে নি। তা ছড়িয়ে দিয়েছে অনলাইন ভিডিওর মাধ্যমে। এসব ভিডিওতে সে জিহাদের ডাক দিয়েছে। রক্তপাতের হুমকি দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা হামলার পর এর দায় স্বীকার করেছে আইএস। তারা এর স্বপক্ষে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। তাতে জাহরানকে একটি রাইফেলে ভর দিয়ে দাঁড়ানো দেখা যায়। অন্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সে আইএসের কালো পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে আছে এবং তাদের নেতার আনুগত্য প্রকাশ করছে।
তবে জাহরান ও আইএসের মধ্যে কীভাবে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বা তাদের সম্পর্ক কি তার যথার্থতা এখনো পাওয়া যায় নি। ভারতীয় নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এ বছরের শুরুর দিকে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি সন্দেহভাজন আইএসের সেল ঘেরাও দিয়ে তল্লাশি চালায়। সেখানে পাওয়া যায় জাহরানের ভিডিওর কপি। ওই অপারেশন চালানো হয়েছিল ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে। এটি শ্রীলঙ্কার ঠিক এপাড়ে।
২০০৫ সালে জাহরান চেয়েছিল বিশ্বে তার নাম ছড়িয়ে পড়ুক। তার নিজের শহর কাত্তানকুড়ি হলো শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে সাত ঘণ্টা দূরত্বে। সেখানে ২০০৬ সালে দারুল আতার নামে একটি মসজিদে যোগ দেয় সে। তারপর ম্যানেজমেন্ট কমিটিতে নিজের স্থান করে নেয়। কিন্তু তিন বছরের মধ্যে কমিটি হতাশ হয়ে পড়েছিল। এর কারণ হিসেবে মসজিদটির ইমাম এমটিএম ফাওয়াজ বলেন, জাহরান চাইতো নিজের মতো স্বাধীনভাবে কথা বলতে। সে বড়দের উপদেশ নিতো না। সে ছিল খুব বেশি রক্ষণশীল। নারীরা হাতে চুরি বা কানে দুল পরলে সে তার বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতো। এ অবস্থায় মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে আমাদের বাকিরা সবাই এক হলাম। কিন্তু জাহরান চাইছিল নিজের মতো করে কথা বলবে। জাহরানকে তিনি ব্ল্যাক শিপ বা কুলাঙ্গার হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বলেন, সে সব কিছুকে ভেঙে দিয়েছে।
স্কুলে জাহরানের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল মোহাম্মদ ইউসুফ মোহাম্মদ তৌফিকের। এক সময় তার অনুসারী হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু ইসলামকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা দেয়ার যে স্বভাব জাহরানের মধ্যে দেখা দেয় তাতে সমস্যা আবর্তিত হয়।
এক পর্যায়ে মতবিরোধ দেখা দেয়ায় ২০০৯ সালে তিন মাসের জন্য ধর্মীয় উপদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে মসজিদে নিষিদ্ধ করে ম্যানেজিং কমিটি। এর ফলে ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে যায় জাহরান। কমিটির প্রধান মোহাম্মদ ইসমাইল মোহাম্মদ নওশাদ বলেন, সে নিজেকে একজন বখে যাওয়া বালক হিসেবে প্রকাশ ঘটিয়েছে। তার মানসিকতা অত্যন্ত সংকীর্ণ। সে সব সময় সমস্যা সৃষ্টি করতো।
কমিটিতে নিষিদ্ধ হওয়ার পর জাহরান তার নিজের অনুসারীদের একটি গ্রুপ সংগ্রহ করার চেষ্টা শুরু করে। এ জন্য তারা একটি কুঁড়েঘরে বসতো। তখন জাহরানের বয়স ২৩ বছর। সে কলম্বোর বাইরে একটি ছোট শহরের এক বালিকাকে বিয়ে করে। নিয়ে যায় নিজের শহর কাত্তানকুড়িতে। এ তথ্য দিয়েছে জাহরানের বোন মাথিয়ানিয়া। সে বলেছে, ওই বালিকার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। তাই তার সঙ্গে আমার তেমন সম্পর্ক তৈরি হয় নি। আজেবাজে কথাবার্তা বললেও জাহরান হয়ে ওঠে দক্ষ এক বক্তা। তার বয়সী অন্যরা তার বক্তব্যের ভক্ত হয়ে ওঠে।
বিভিন্ন সময়ে সে দেশের বিভিন্ন স্থান সফর করে নিজের মত প্রকাশ করতে থাকে। জাহরান তার জনপ্রিয় একটি টার্গেট ঠিক করে শহরের সূফী মতাবলম্বী সম্প্রদায়কে। কয়েক বছরের মধ্যে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। ২০০৪ সালে একটি সূফী মসজিদে গ্রেনেড হামলা হয়। ২০০৬ সালে সূফী মতাবলম্বীদের বেশকিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আশেপাশের মসজিদ থেকে ঘোষণা আসে একজন সূফী নেতাকে হত্যা করার। ২০১২ সালে জাহরান নিজে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা শুরু করে। এতে সূফী সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও পরে জাতীয় পর্যায়ে সরকারি অফিসগুলোতে জানানো হয় অভিযোগ।
কিন্তু কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয় নি। ওই সময় কাত্তানকুড়ি পুলিশ স্টেশনে ওসি ছিলেন আরিয়াবন্ধু ওড়োগেদারা। তিনি টেলিফোনে বলেছেন, ধর্মীয় মতভেদের কারণে তিনি কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারেন না। তিনি আরো বলেছেন, সমস্যাটি ছিল ইসলামপন্থি ভিন্ন দুটি গ্রুপের মধ্যে বিভেদ।
এ পর্যায়ে জাহরান তার মত প্রচারের জন্য ব্যবহার করে ইন্টারনেট। বোমা হামলার পর তার ফেসবুক পেজ নামিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে স্থানীয় মুসলিমরা বলছেন, সে যেসব ভিডিও ক্লিপ দিয়েছে তাতে এর আগে বেশ তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছে। সে বক্তব্যে সূফীদেরকে কাফির বা অবিশ্বাসী বলে আখ্যায়িত করেছে। জাহরানের বোন মাথানিয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জাহরানের ধ্যান-ধারণা ইন্টারনেটে আইএসের দৃষ্টিভঙ্গি আরো উগ্র করে তুলেছিল। (সূত্র- রয়টার্স )
একনজরে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯
জাহরানের ওপর বার্তা সংস্থা রয়টার্স বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়, ১২ বছর বয়সে স্থানীয় জমি’আতুল ফালাহ এরাবিক কলেজে পড়াশোনা শুরু করে জাহরান। শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলে সমুদ্রের পাড়ে একটি ছোট শহরে তাদের বাসা ছিল। বাসায় ছিল ২টি কক্ষ, জাহরান ও তার চার ভাইবোন মিলে অনেক কষ্টেই বসবাস করতো। তাদের পিতা ছিলেন একজন গরিব মানুষ। রাস্তায় প্যাকেটজাত খাদ্য বিক্রি করতেন। এলাকায় তিনি ছোটখাটো চোর বলে পরিচিত ছিলেন।
জমি’আতুল ফালাহ এরাবিক কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল এসএম আলিয়ার সশব্দে হাসতে হাসতে বলেন, জাহরানের পিতা তেমন কিছু করতেন না। তবে মানসিক প্রখরতা দিয়ে সবাইকে বিস্মিত করেছিল জাহরান। তিন বছর পবিত্র কোরআন মুখস্থ করার চেষ্টা করে সে। এরপরেই তার পড়াশোনা ছিল ইসলামিক আইনকানুন নিয়ে। কিন্তু সে যতই শিখতে থাকে ততই যুক্তি দিতে থাকে।
এসএম আলিয়ার বলেন, আমরা যে পদ্ধতিতে শিক্ষা দিচ্ছিলাম সে তার বিরোধিতা করে। সে চাইতো ইসলামভিত্তিক তার উগ্রপন্থাকে প্রাধান্য দিতে। তাই আমরা তাকে বের করে দিয়েছি।
বর্তমানে এই শিক্ষকের বয়স ৭৩ বছর। মুখে লম্বা সাদা দাড়ি। তিনি স্মরণ করতে পারেন জাহরান পড়াশোনা বাদ দিয়ে চলে গিয়েছিল ২০০৫ সালে। তারপর তার পিতা স্কুলে হাজির হয়ে জানতে চান, সে কোথায় যেতে পারে?
এরপর নতুন করে ওই স্কুলে মোহাম্মদ জাহরানকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এখন সারা বিশ্ব তার নাম জানে। ২১শে এপ্রিল কয়েকটি গির্জা ও পাঁচ তারকা হোটেলে সন্ত্রাসী হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এর মূলহোতা সে বলে চিহ্নিত করেছে সরকারি কর্মকর্তারা। ৯ আত্মঘাতী বোমারু ওই হামলায় অংশ নেয়। এতে শিশু, নারী, পুরুষ মিলিয়ে কমপক্ষে ২৫০ মানুষ নিহত হন। হামলাকারীদের বেশির ভাগই সুশিক্ষিত, সম্পদশালী পরিবারের সন্তান। তবে এই বর্ণনা তাদের কথিত নেতা জাহরানের ক্ষেত্রে যায় না। তাদের থেকে ৩০-এর কোটায় বয়সের এই নেতা ছিল ভিন্ন।
প্রাপ্ত বয়সকালের বড় অংশ সে নিজের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করতে ব্যবহার করেছে। এখন ইন্টারনেটের যুগ। তাই নিজের দৃষ্টিভঙ্গি সে স্থানীয় পর্যায়ে রাখে নি। তা ছড়িয়ে দিয়েছে অনলাইন ভিডিওর মাধ্যমে। এসব ভিডিওতে সে জিহাদের ডাক দিয়েছে। রক্তপাতের হুমকি দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা হামলার পর এর দায় স্বীকার করেছে আইএস। তারা এর স্বপক্ষে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। তাতে জাহরানকে একটি রাইফেলে ভর দিয়ে দাঁড়ানো দেখা যায়। অন্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সে আইএসের কালো পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে আছে এবং তাদের নেতার আনুগত্য প্রকাশ করছে।
তবে জাহরান ও আইএসের মধ্যে কীভাবে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বা তাদের সম্পর্ক কি তার যথার্থতা এখনো পাওয়া যায় নি। ভারতীয় নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এ বছরের শুরুর দিকে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি সন্দেহভাজন আইএসের সেল ঘেরাও দিয়ে তল্লাশি চালায়। সেখানে পাওয়া যায় জাহরানের ভিডিওর কপি। ওই অপারেশন চালানো হয়েছিল ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে। এটি শ্রীলঙ্কার ঠিক এপাড়ে।
২০০৫ সালে জাহরান চেয়েছিল বিশ্বে তার নাম ছড়িয়ে পড়ুক। তার নিজের শহর কাত্তানকুড়ি হলো শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে সাত ঘণ্টা দূরত্বে। সেখানে ২০০৬ সালে দারুল আতার নামে একটি মসজিদে যোগ দেয় সে। তারপর ম্যানেজমেন্ট কমিটিতে নিজের স্থান করে নেয়। কিন্তু তিন বছরের মধ্যে কমিটি হতাশ হয়ে পড়েছিল। এর কারণ হিসেবে মসজিদটির ইমাম এমটিএম ফাওয়াজ বলেন, জাহরান চাইতো নিজের মতো স্বাধীনভাবে কথা বলতে। সে বড়দের উপদেশ নিতো না। সে ছিল খুব বেশি রক্ষণশীল। নারীরা হাতে চুরি বা কানে দুল পরলে সে তার বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতো। এ অবস্থায় মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে আমাদের বাকিরা সবাই এক হলাম। কিন্তু জাহরান চাইছিল নিজের মতো করে কথা বলবে। জাহরানকে তিনি ব্ল্যাক শিপ বা কুলাঙ্গার হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বলেন, সে সব কিছুকে ভেঙে দিয়েছে।
স্কুলে জাহরানের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল মোহাম্মদ ইউসুফ মোহাম্মদ তৌফিকের। এক সময় তার অনুসারী হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু ইসলামকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা দেয়ার যে স্বভাব জাহরানের মধ্যে দেখা দেয় তাতে সমস্যা আবর্তিত হয়।
এক পর্যায়ে মতবিরোধ দেখা দেয়ায় ২০০৯ সালে তিন মাসের জন্য ধর্মীয় উপদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে মসজিদে নিষিদ্ধ করে ম্যানেজিং কমিটি। এর ফলে ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে যায় জাহরান। কমিটির প্রধান মোহাম্মদ ইসমাইল মোহাম্মদ নওশাদ বলেন, সে নিজেকে একজন বখে যাওয়া বালক হিসেবে প্রকাশ ঘটিয়েছে। তার মানসিকতা অত্যন্ত সংকীর্ণ। সে সব সময় সমস্যা সৃষ্টি করতো।
কমিটিতে নিষিদ্ধ হওয়ার পর জাহরান তার নিজের অনুসারীদের একটি গ্রুপ সংগ্রহ করার চেষ্টা শুরু করে। এ জন্য তারা একটি কুঁড়েঘরে বসতো। তখন জাহরানের বয়স ২৩ বছর। সে কলম্বোর বাইরে একটি ছোট শহরের এক বালিকাকে বিয়ে করে। নিয়ে যায় নিজের শহর কাত্তানকুড়িতে। এ তথ্য দিয়েছে জাহরানের বোন মাথিয়ানিয়া। সে বলেছে, ওই বালিকার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। তাই তার সঙ্গে আমার তেমন সম্পর্ক তৈরি হয় নি। আজেবাজে কথাবার্তা বললেও জাহরান হয়ে ওঠে দক্ষ এক বক্তা। তার বয়সী অন্যরা তার বক্তব্যের ভক্ত হয়ে ওঠে।
বিভিন্ন সময়ে সে দেশের বিভিন্ন স্থান সফর করে নিজের মত প্রকাশ করতে থাকে। জাহরান তার জনপ্রিয় একটি টার্গেট ঠিক করে শহরের সূফী মতাবলম্বী সম্প্রদায়কে। কয়েক বছরের মধ্যে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। ২০০৪ সালে একটি সূফী মসজিদে গ্রেনেড হামলা হয়। ২০০৬ সালে সূফী মতাবলম্বীদের বেশকিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আশেপাশের মসজিদ থেকে ঘোষণা আসে একজন সূফী নেতাকে হত্যা করার। ২০১২ সালে জাহরান নিজে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা শুরু করে। এতে সূফী সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও পরে জাতীয় পর্যায়ে সরকারি অফিসগুলোতে জানানো হয় অভিযোগ।
কিন্তু কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয় নি। ওই সময় কাত্তানকুড়ি পুলিশ স্টেশনে ওসি ছিলেন আরিয়াবন্ধু ওড়োগেদারা। তিনি টেলিফোনে বলেছেন, ধর্মীয় মতভেদের কারণে তিনি কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারেন না। তিনি আরো বলেছেন, সমস্যাটি ছিল ইসলামপন্থি ভিন্ন দুটি গ্রুপের মধ্যে বিভেদ।
এ পর্যায়ে জাহরান তার মত প্রচারের জন্য ব্যবহার করে ইন্টারনেট। বোমা হামলার পর তার ফেসবুক পেজ নামিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে স্থানীয় মুসলিমরা বলছেন, সে যেসব ভিডিও ক্লিপ দিয়েছে তাতে এর আগে বেশ তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছে। সে বক্তব্যে সূফীদেরকে কাফির বা অবিশ্বাসী বলে আখ্যায়িত করেছে। জাহরানের বোন মাথানিয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জাহরানের ধ্যান-ধারণা ইন্টারনেটে আইএসের দৃষ্টিভঙ্গি আরো উগ্র করে তুলেছিল। (সূত্র- রয়টার্স )
একনজরে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯
No comments:
Post a Comment