চাঞ্চল্যকর নুশরাত হত্যাকান্ড
গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা অধিকার বিভাগের এক আদেষদ্বারা নুসরাত হত্যাকাণ্ডে ব্যাপক সমালোচিত পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।পুলিশ সদরদফতর দ্বারা গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা গাছে। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ সদর দফতর হস্তক্ষেপ না করলে ঘটনার দিন এসপি ঘটনাস্থলেই যেতেন না। জীবন্ত মানুষ পোড়ানোর মতো মর্মান্তিক ঘটনা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে বিন্দুমাত্র নাড়া দেয়নি। যখন পুলিশ সদর দফতর থেকে এসপিকে ফোন করা হয়, তখন এসপি ছিলেন খাগড়াছড়ির পথে। তাকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলে বিকাল ৫টার পরে তিনি সোনাগাজীতে যান। অথচ কারও নির্দেশের অপেক্ষায় না থেকে এসপির উচিত ছিল সোনাগাজীতে ছুটে যাওয়া। পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনের সঙ্গে মিলে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর সব ধরনের চেষ্টা করেন।
বিষয়টি মিডিয়াতে আসার কারণে অপচেষ্টা সফল হয়নি। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অংশ হিসেবেই ঘটনা বিকৃত করে ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে পুলিশ সদর দফতরে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন এসপি জাহাঙ্গীর আলম।
চাঞ্চল্যকর নুশরাত হত্যাকান্ড |
উক্ত ঘটনার আগে একই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে অভিযুক্ত এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইউসুফকে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে এবং এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইকবাল আহাম্মদকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সংযুক্ত করা হয়েছে।গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত জাহান রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান। বোরকা পরিহিত কয়েকজন তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত।
No comments:
Post a Comment